ভ্রমণের খানাখাদ্য (কি কি খাওয়া উচিত?)

Posted on | 2 Comments

মণের খাবার-দাবারের ব্যাপারে প্রথমে যে জিনিশটি সকলের মাথায় রাখা উচিত তা হল হাইজেনিক ফ্যাক্টর। আপনি যে খাবারটি খাচ্ছেন তা স্বাস্থ্যসম্মত কি না তা যাচাই করে নেয়া উচিত। প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোড়কজাত খাবার কেনার বেলায় এক্সপায়ার ডেটের ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন এবং সাথে অবশ্যই মেনুফেচার।

• ভ্রমণের সময় সেদ্ধ এবং গরম খাবার খাওয়া উচিত। এতে হাইজেননেস এবং হজম উভয়েরই সুরক্ষা হয়।
• ভ্রমণে একবারে বেশী করে খাবার না গ্রহণ করাই উচিত কারণ পুরো ভুঁড়িভোজন শরীরে আলস্য নিয়ে আসে যা ভ্রমণে একান্তই কাম্য নয়।
• প্রথমেই আসি সকালের নাস্তার কথায়। সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তাই সকালের নাস্তা ভালো হওয়া চাই, কেননা সকালের নাস্তা আপনার সারাদিনের ভ্রমণে শক্তি যোগাবে। সকালের নাস্তায় আঁশযুক্ত এবং শর্করাসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। সাথে লো-ফ্যাট দধি, ফলজাতীয় খাবার, সিদ্ধ ডিম (অমলেট, মামলেট অবশ্যই নয়), হালকা মিষ্টি চা-কফি থাকতে পারে। তবে সবচেয়ে বেটার পানীয় হল পানি। তবে পানি পানের সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
• লোকাল রেস্টুরেন্টে নাস্তা করলে অবশ্যই সেঁকা আটা/ময়দার রুটি সাথে সবজি ভাজি বেটার অপশন। রুটি না পাওয়া গেলে তেল ছাড়া পরাটা খেতে পারেন। রেস্টুরেন্ট না থাকলে সেদ্ধ ডিম, কলা, টোষ্ট হতে পারে বেটার চয়েস।
• লাঞ্চে আমরা ভারী খাবার খেতে অভ্যস্ত। তাই খাবার হওয়া উচিত কম মশলাদার, তেল পরিমিত রান্না করা, সহজে পরিপাক হয় এমন। এক্ষেত্রে ভাঁজা-পোড়া মেন্যু এভয়ড করাই শ্রেয়। উপযুক্ত সেদ্ধ সবজি, মাছ হতে পারে আদর্শ লাঞ্চ মেন্যু। সাথে সালাদ থাকলে ভালো হয়। তবে যেখানেই খাবার খাবেন সবসময় হাইজিন ফ্যাক্টর মাথায় রাখবেন।
• ভ্রমণের খাবারে রেড মিট যতটা সম্ভব এভয়ড করুন। পোলাও জাতীয় খাবারের বেলায়ও একই কথা বলব।
• সারাদিনের ভ্রমণে বের হলে লাঞ্চ কখন করবেন সে অনুযায়ী লোকেশন প্রেডিকশন করে জেনে নিন লাঞ্চ টাইমে যেখানে থাকবেন সেখানে লাঞ্চ এভেইলেবল কিনা। যদি আগাম জানা সম্ভব না হয় তবে ব্যাকাপ স্নাক্স নিয়ে নিন। তবে এই স্নাক্স খুব লাইট হলে ভালো হয়। কারন লাঞ্চের বিকল্প কখনোই স্নাক্স হওয়া উচিত নয়।
• দুপুরের খাবারের সাথে সাথে লম্বা জার্নিতে না বের হয়ে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে একটা চা-বিরতি নেন, তার পর যাত্রা আরম্ভ করেন।
• রাতের খাবারের মেন্যুতে যে জিনিসটি মাথায় রাখা উচিত তা হল আপনার ব্যাক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্যবোধ। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে দেহকে রিচার্জ করতে রাতের খাবার হওয়া উচিত উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এবং সহজপাচ্য। কেননা আপানার হজমের সমস্যার কারনে আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন না আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটুক যা আপনার পরবর্তী দিনের ভ্রমণকে নষ্ট করে।
• রাতের খাবারে স্যুপ জাতীয় খাবার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত। ফলমূল এবং লো-ফ্যাট মিল্ক থাকতে পারে। মেইন কোর্সে ভাত বা আটার রুটি থাকবে কিন্তু পরিমানে তা যেন বেশী না হয়।
• ভ্রমণের খাবারে ফাস্টফুড আইটেম, বেভারেজ, ফ্লেভারড জুস, চিপস ইত্যাদি এভয়ড করুন। এইসবের পরিবর্তে দেশীয় ফল – পেয়ারা, আমড়া, কলা, বড়ই, আনারস, জাম ইত্যাদি (মৌসুম ভেদে যা যখন এভেইলেবল থাকে) খেতে পারেন।

সবশেষে আবারো বলব, ভ্রমণের খাবারে যা লক্ষ্য রাখবেন – হেলথ এন্ড হাইজিন ফ্যাক্টর, তেল-মশলা কম, সহজপাচ্য, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।